গাজি নাইম উদ্দিন যাত্রাবাড়ি মাছের আড়তে চাকরি করতেন। চাকরি ফেলেই শেষের দিনগুলাতে আন্দোলনে যোগ দেন।
৫ তারিখ ফ্লাইওভারের নিচে গেইমসের মত গুলি করার যে ভিডিওটা আপনারা দেখছেন, তার ভয়াবহ বর্ণনা নাইম হদ্দিন নিজ মুখে দিয়েছেন। উনি সেইদিনই আহত হন।
থানা থেকে ঝাকে ঝাকে পুলিশ বের হয়ে যখন ফায়ার করতে শুরু করে, নাইম উদ্দিনসহ প্রায় ২০/৩০ জনের একটা দল একটা আন্ডারগ্রাউন্ড দোকানের এরিয়ায় ঢুকে পড়ে। বাইরে তখন ডজনে ডজনে লাশ পড়তেছে। শহিদ মাওলানা খুবাইবের কথা মনে পড়ে? উনাকে দৌড় দিতে বলে, আর পিছন থেকে ফায়ার করে দেয়। নাইম উদ্দিনের ঘটনাটা সেইম সময়েই ঘটতেছিল।
উনারা জানের ভয়ে একজন আরেকজনের উপর শুয়ে স্তুপের মত হয়ে ছিলেন এই আন্ডারগ্রাউন্ডে। ওই স্তুপেই, কারো ঘাড়ে গুলি, কারো পায়ে গুলি। শেষমেশ ওই এরিয়ায় পুলিশ ঢুকে। কোনো কোনো পুলিশ উনাদেরকে জায়গাতেই ক্রসফায়ার করে দিতে বলে, আরেকদল পুলিশ পরে 'না' করে। নাইমরা দৌড় দেন, পিছন দিক থেকে ফায়ার ঠিকই হয়। নাইমের পিছনেই দুইজন লুটায়ে পড়েন, আর উনার পায়ের পিছন দিক থেকে গুলি ঢুকে সামনে দিয়ে বের হয়ে যায়।
নাইম উদ্দিন এখন গ্রামে থাকেন, হাটতে পারার সক্ষমতা আসছে ধীরে ধীরে।
যে জুলাইয়ের জন্য রোজগারি হারাইছেন, সেই রোজগারির ব্যবস্থা এখনো পর্যন্ত হয়নাই। আহতদের যে ফান্ড সেটাও পান নাই।
জুলাইয়ের স্তালিনগ্রাদের বীরযোদ্ধা নাইম উদ্দিনের সংসার কিভাবে চলতেছে, সেই খোঁজ কি কেউ নিতে চান? আমাদের জানা নাই।
৩০ ডিসেম্বর, ২০২৪।