গাজি ইখলাস মিঞা নয়ন
Home » Uncategorized  »  গাজি ইখলাস মিঞা নয়ন
গাজি ইখলাস মিঞা নয়ন

৪ই আগস্ট নিউমার্কেটে মারাত্মক আহত হন ইখলাস মিয়া নয়ন। তার আগের দিনই বহদ্দারহাটে সন্ধ্যায় ফ্লাইওভারের সব লাইট অফ করে দিয়ে তাদের মাত্র বিশ-চল্লিশজন আন্দোলনকারীর উপর এক টানা গুলি চালাইসিল পুলিশ। ইখলাস ভাই বেঁচে গেলেও তার ভাষ্যমতে তার গায়ের উপর কারো না কারো লাশ পড়ে ছিল অনেকক্ষণ। আবার তাকে চিহ্নিত করে রাতে তার ঘরেও এটাক দিসিল লোকাল লীগের পোলাপান, তিনি পালায়ে ছিলেন। তাও পরদিন সকালেই মৃত্যুর তৈয়ারি নিয়ে হাজির হই যান নিউমার্কেটে।

এর মধ্যে অনেক ছোট ছোট ঘটনা, দিনশেষে ইখলাস ভাই গাজি, ফিরে আসছেন মৃত্যুর মুখ থেকে, সারা শরীরে প্রথম দফা লাঠি আর ফাটা বাঁশের মাইর, তারপর কিরিচ রামদার কোপ, এরপরে বাহুতে ঢুকসে গুলি, আবার সবশেষে বন্দুকের বাট দিয়ে মাথায় জখম—মাথা থেকে নিয়ে পিঠ, পেট, পাকস্থলী পর্যন্ত অজস্র ক্ষত নিয়ে তিনি এখন চলাফিরা করতেসেন।

ইখলাস ভাইয়ের ঘটনা ভয়াবহ, কত ধরনের যে ডাইমেনশন তার লড়াইয়ে! তার মুখে তার জুলাই আগস্টের জার্নি শুনলে বারবার চামড়া কাঁপি উঠবে।

কিন্তু আল্টিমেটলি, ঘরের একমাত্র ছেলে ইখলাস ভাই তার চিকিৎসা আর গত পাঁচমাসের খরচাদি চালাইতেসেন নিজের আর বাবা-মায়ের টানাটানি কিছু টাকায় আর বাকি সব ধারদেনায়। দেরিতে হইলেও তার সাথে স্থানীয় সমন্বয়কদের তরফে যোগাযোগ করা হইসে। অবস্থাটা দেখেন, তারা ৩১শে ডিসেম্বর ঢাকায় নেওয়ার জন্য তাকে ঠিকই ডাকতেসে, কিন্তু তার যেই পাওনা ঝুলে আছে সেই চিকিৎসা-পুনর্বাসন খরচ সম্মানের সাথে বুঝায়ে দিতে পারতেসেনা। ইখলাস ভাইয়ের সাথে কথা বললে বুঝবেন দেশের জন্য কোরবান হওয়া একেকজন মানুষ কি পরিমাণ সম্মান ডিজার্ভ করে, আর কি পরিমাণ সেটা থেকে তারা বঞ্চিত হয়।

৩১ ডিসেম্বর, ২০২৪। সুলাইম মাহমুদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *